তায়াম্মুম

তায়াম্মুম শব্দের অর্থ হচ্ছে ধারনা বা ইচ্ছা করা। ফেকাহের পরিভাষায় এর অর্থ হলো মাটি দ্বারা পবিত্র হওয়ার ইচ্ছা করা। তায়াম্মুম অযু ও গোসল উভয়ের পরিবর্তে করা যায়।
“আর তোমরা যদি পানি না পাও, তাহলে পাক মাটি দিয়ে কাজ সেরে নাও। তাতে হাত মেরে চেহারা এবং হাতদুটির উপর মুসেহ কর। আল্লাহ তোমাদেরকে সংকীর্ণতার মধ্যে ফেলতে চাননা। বরঞ্চ তিনি তোমাদেরকে পাক করতে চান এবং চান যে তোমাদের উপর তার নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিবেন যাতে তোমরা শোকর গোজার হতে পার।” (মায়েদাহঃ ৬)

তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি
১. আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে পাক হওয়ার নিয়ত করা।
২. দু’হাত মাটির উপর মৃদু আঘাত করে সমস্ত চেহারার উপর মর্দন করা।
৩. তারপর দু’হাত মাটির উপর মৃদু আঘাত করে বা মেরে কনুই পর্যন্ত দু’হাতে মর্দন করা।
তায়াম্মুমের সুন্নাত
১. তায়াম্মুমের প্রথমে বিস্মিল্লাহ বলা।
২. মসনূন তরীকায় তায়াম্মুম করা। অর্থাৎ প্রথমে চেহারা মুসেহ করা এবং তারপর দু’হাত কনুই পর্যন্ত মুসেহ করা।
৩. পাক মাটির উপর হাতের ভেতর দিক মারতে হবে, পিঠের দিক নয়।
৪. হাত মাটিতে মারার পর মাটি ঝেড়ে ফেলা।
৫. মাটিতে হাত মারার সময় আঙ্গুলগুলো প্রশস্ত রাখা যাতে ভেতরে ধূলা পৌঁছে যায়।
৬. অন্ততপক্ষে তিন আঙ্গুল দিয়ে চেহারা ও হাত মুসেহ করা।
৭. প্রথম ডান হাত পরে বাম হাত মুসেহ করা।
৮. চেহারা মুসেহ করার পর দাঁড়ি খেলাল করা।

কি কি অবস্থায় তায়াম্মুম করা জায়েয
১. এমন স্থানে যেখানে পানি পাওয়ার আশা নেই।
২. পানি আছে তবে আনতে গেলে মৃত্যুর আশংকা আছে।
৩. পানির পরিমাণ এতই কম যে, পরবর্তীতে পিপাসায় কষ্ট হবে বা রান্না করা যাবেনা।
৪. পানি ব্যবহারে রোগ বৃদ্ধির আশংকা থাকলে।
৫. পানি যদি কিনে নিতে হয় তবে দাম এতই চড়া যে, পরবর্তীতে প্রচণ্ড অর্থকষ্টে পড়তে হয়।
৬. অজু করলে এমন নামায ছুটে যাওয়ার আশংকা আছে যার কাযা নেই। যেমন: জানাজা নামায, ঈদের নামাজ ইত্যাদি।
৭. পানি আছে তবে এতই দুর্বল বা অসুস্থ যে পানি ব্যবহার করার সামর্থ্য নেই।
৮. বিরতিহীন যানবাহনে চলাচল করা অবস্থায়।

×

Comments are closed.