ইসলামে নারীর মর্যাদা

Posted in বিষয়ভিত্তিক on May 31, 2015 by

“নারী-পুরুষ মহান আল্লাহর সর্বোত্তম সৃষ্টি। আল্লাহ বলেন: “আমি মানব মণ্ডলীকে সর্বোত্তম আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছি।” (সূরা আত তীন : ৪)

আল্লাহ তায়ালার এই সৃষ্টিতে কোন ধরনের পক্ষপাতিত্ব নেই; সবার জন্য সব কিছুই যথাযথ প্রদান করেছেন। যার যার কর্মস্থল নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমাদের ডান এবং বাম চোখ দুটো আমাদের কাছে যেমন সমানভাবে প্রিয়, ঠিক তেমনি আল্লাহর কাছেও নারী-পুরুষ সমান। তিনি কোন পক্ষকেই আলাদা করে গুরুত্ব দেননি। তিনি পবিত্র কুরআনুল কারীমে বলেছেন :

“এতো আমার অনুগ্রহ, আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং তাদেরকে জলে স্থলে সওয়ারী দান করেছি, তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে রিযিক দিয়েছি এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি।” (সূরা বনী ইসরাঈল : ৭০)

সুতরাং এ কথা খুবই স্পষ্ট যে, আল্লাহ তায়ালা দু’পক্ষকেই সমান মর্যাদা দিয়েছেন। এবং যার যার শারীরিক (Physical) সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ ভিন্ন দিয়েছেন, কিন্তু মর্যাদা কম দেননি। সুতরাং নারী-পুরুষের হিসাব যদি শুধু শক্তি আর দক্ষতার নিরীক্ষে হয়, আর মর্যাদার দিকটা উপেক্ষিত হয়, তাহলে এ পৃথিবীতে মানব সমাজে এত বেশি ভারসাম্যহীনতা দেখা দেবে যে তা ঠিক করা কারো পক্ষেই সম্ভব হবেনা।

 নারীদের ব্যাপারে ইসলামের মনোভাব :

১. মানুষ হিসেবে মর্যাদা

মহান আল্লাহ বলেন:

“হে মানব জাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দুজনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন।” (সূরা আন নিসা : ১)

২. সম্মান এবং মর্যাদার ক্ষেত্রে

“এতো আমার অনুগ্রহ, আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং তাদেরকে জলে স্থলে সওয়ারী দান করেছি, তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে রিযিক দিয়েছি এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি।” (সূরা বনী ইসরাঈল : ৭০)

৩. সম্পত্তির উত্তরাধিকার

এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“মা-বাপ ও আত্মীয় ¯স্বজনেরা যে ধন-সম্পত্তি রেখে গেছে তাতে পুরুষদের অংশ রয়েছে। আর মেয়েদের অংশ রয়েছে সেই ধন-সম্পত্তিতে, যা মা-বাপ ও আত্মীয়-স্বজনরা রেখে গেছে, তা সামান্য হোক বা বেশি এবং এ অংশ (আল্লাহর পক্ষ থেকে) নির্ধারিত।” (সূরা আন নিসা : ৭)

৪. শরিয়াত প্রদত্ত দায়িত্বের ক্ষেত্রে

“জবাবে তাদের রব বললেন: আমি তোমাদের কারো কর্মকাণ্ড নষ্ট করবো না। পুরুষ হও বা নারী, তোমরা সবাই একই জাতির অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আলে ইমরান : ১৯৫)

৫. লেখা পড়ার অধিকার

এ প্রসঙ্গে রাসূল (সা.) বলেন : (فعلمهن مما علمه الله تعالى) তাদের সেই শিক্ষা দাও যা আল্লাহ তায়ালা শিখিয়েছেন।” (সহীহ আল বুখারী)

৬. ধর্মীয় প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে মর্যাদা

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“হে লোকজন যারা ঈমান এনেছো, তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবার ও সন্তান-সন্তুতিকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো, মানুষ এবং পাথর হবে যার জ্বালানী। সেখানে রূঢ় ¯স্বভাব ও কঠোর হৃদয়ের ফেরেশতারা নিয়োজিত থাকবে যারা কখনো আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না এবং তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাই পালন করে।” (সূরা আত-তাহরীম : ৬)

৭. মেয়েদের জন্য উত্তম অসিয়ত করে যাওয়া

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“আমি মানুষকে এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে, তারা যেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে। তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলো এবং কষ্ট করেই তাকে প্রসব করেছিলো। তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে।” (সূরা আহকাফ : ১৫)

৮. স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সমান অধিকার 

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে:

(وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِيْ عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوْفِ) “নারীদের জন্যও ঠিক তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের অধিকার আছে তাদের ওপর।” (সূরা আল বাকারা : ২২৮)

উপরোক্ত সামান্য কয়েকটি প্রমাণ  উপস্থাপন করা হলো যা থেকে বুঝতে মোটেও কষ্ট হবার কথা নয় যে, নারীর ব্যাপারে ইসলামের মনোভাব কেমন।

 প্রাচীন সভ্যতা এবং ধর্মগুলো নারীদের ব্যাপারে কী মনোভাব দেখিয়েছে:

ইহুদী ধর্ম নারীকে ‘পুরুষের প্রতারক’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের সমাজের নারীদের চাকরানীর মত মনে করা হতো, পুরুষদের বর্তমানে নারী কোন সম্পত্তির মালিক হতে পারতনা, দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারতনা। এরপর খ্রীষ্ট ধর্ম নারীদের ব্যাপারে নিকৃষ্টতম অবস্থান গ্রহণ করেছে। বাইবেল বলছে প্রথম পাপের সমস্ত দোষ মাতা হাওয়ার। সেখানে বলা হয়েছে “Adam was not deceived, but the woman being deceived, was in the transgression” তারা বলে যেহেতু নারী আদি পাপের উৎস, মানুষের জন্মগত পাপের কারণ, সব ভর্ৎসনা, অবজ্ঞা ও ঘৃণার পাত্রী সেই। এই নারী শয়তানের যন্ত্র (She is the organ of the Devil), কামড় দিবার জন্য সদা প্রস্তুত (A scorpion ever ready to sting), বিষাক্ত বোলতা (Poisonous asp)| হিন্দু ধর্মে এমনটা মনে করা হতো যে, আগুন, পানি, নিরেট মূর্খ, সাপ, রাজ পরিবার ও নারী এরা সবাই ধ্বংসের কারণ হয়ে থাকে। এদের ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে: মৃত্যু, নরক, বিষ, সর্প এবং আগুন এর কোনটিই নারী অপেক্ষা খারাপ নয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে নারী হচ্ছে সকল অসৎ প্রলোভনের ফাঁদ। এর বর্ণনা দিয়ে ঐতিহাসিক Westermark বলেন: Women are, of all the snares which the temper has spread for man, the most dangerous; in women are embodied all the powers of infatuation which blind the mind of the world (মানুষের জন্য প্রলোভন যতগুলো ফাঁদ বিস্তার করে রেখেছে তন্মধ্যে নারীই সবচেয়ে বিপদজনক। নারীর মধ্যে মোহিনী শক্তি আবির্ভূত হয়ে আছে যা সমগ্র বিশ্বের মনকে অন্ধ করে দেয়)। Aristotle বলেন: man is by nature superior to the female and so the man should rule and the woman should be ruled.

বিভিন্ন সভ্যতায় নারীর মূল্যায়নের চিত্র আরও নীচ, হীন ও লজ্জাকর। যেমন: সপ্তাদশ শতাব্দীতে রোম নগরীতে নর সমাজ তাদের Council of the wise সভায় সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, “Women has no soul” “নারীর কোন আত্মা নেই”। গ্রীক সভ্যতায় মনে করা হতো ÒA commodity to be bought and sold”. ইন্ডিয়ার দীর্ঘ দিনের নিয়ম ছিল এমন “A wife’s life ended with the death of her husband, the widow has to jump into the flames of her husband’s funeral pyre”| ইসলাম পূর্ব আরব সভ্যতায় নারীর চিত্র ছিল “A woman was regarded as a cause for giref and unhappiness and baby girls were sometimes buried after birth”| ৫৮৭ সালে ফ্রান্সে এক সভার সভাষদগণ মহিলাদের মর্যাদা নিরূপনের সময় তাদের মত এভাবে প্রকাশ করেন “Whether a woman could truly be considered a human being or not!” এভাবে নারীদের তথা মাতা, কন্যা ও স্ত্রীর মর্যাদা চরমভাবে ভুলুণ্ঠিত হয়েছে সভ্যতার দাবিদার ইংল্যান্ডে। ৮ম হেনরি মেয়েদের বাইবেল পড়তে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। মধ্যযুগের ক্যাথলিক চার্চের গুরুগণ মহিলাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক মনে করত। আরও অবাক করার মত যে ঘটনা তা হচ্ছে ১৯৬৪ সালের আগে অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের সমান অধিকার ছিলনা। ১৮৫০ সালের পূর্ব পর্যন্ত মহিলারা ইংল্যান্ডের নাগরিক হিসেবে গণ্য হতো না, ১৮৮২ সালের আগে ইংলিশ মহিলাদের ব্যক্তিগত অধিকার বলে কিছু ছিলনা। (In the university of Oxford and Cambridge, male and female students were not given the same rights until 1964. Before 1850, women were not counted as citizens in England, and English women had no personal rights until 1882)

ইসলাম ধর্মে নারীদের যে অবস্থান, আর অন্যান্য প্রধান ধর্ম, সভ্যতা ও ব্যক্তিদের কথায় নারীদের যে চিত্র প্রতিভাত হলো তাতে নিঃসন্দেহে বলা যায় নারীর মর্যাদা প্রদানের ক্ষেত্রে ইসলামের কাছাকাছি কোন ধর্ম, ব্যক্তি ও সভ্যতা নেই। প্রাচীন ঐ সকল ধর্ম, সভ্যতা ও ব্যক্তিদের মূল্যায়ন যদি এমনই হবে তাহলে আর বুঝতে খুব বেশি বাকী থাকেনা যে, সংস্কৃতিতে তাদের মূল্যায়ন কেমন হবে।

সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে নারীর মূল্যায়ন খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমাদের সার্বিক কর্মকাণ্ডকে যদি সংস্কৃতি বলি আর সেখানে নারীকে মূল্যায়ন করতে হয় তাহলে বলতে হবে “কিছু বিপথগামী নারী ততোধিক নষ্ট এবং নোংরা মতলববাজ পুরুষের হাতে বন্দি”। এরা পুতুল নাচের মত পেছন থেকে নাচায়, আর নির্বোধ মেধাশূন্য শরীর সর্বস্ব নারী নাচে আর মনে করে নিজের সর্বোচ্চটা দিলাম আর পৃথিবীর সেরাটা পেলাম!! আসলে সব-ই ভোগাস! সাময়িক স্বার্থের লেনাদেনা মাত্র। আল্লাহ তায়ালা এবং আখেরাতের ব্যাপারে ভয়হীন মানুষগুলো নারীর সংস্কৃতির মূল্যায়ন যেভাবে নির্ধারণ করে তা হলো-

ক. নারী তোমাকে প্রগতিশীল হতে হবে; এই কথার মাঝে সে তাঁর ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, সে সকল কিছু শক্তি দিয়ে বিবেচনা করে, মর্যাদার স্থান একেবারে ভুলে যায়। নারী তখন সুন্দর সমাজের শৃঙ্খল ভেঙ্গে নিজেই অনেকের নোংরা খেলনায় পরিণত হয়।

খ. নারী তোমাকে স্মার্ট হতে হবে; তখন সে আল্লাহর দেয়া বিধানকে বাদ দিয়ে ফেরিওয়ালার ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করে, যার ফলে সে নিজেই পবিত্রতার শৃঙ্খল থেকে বের হয়ে ডাস্টবিনের দ্রব্যে পরিণত হয়।

গ. আবার তাকে বলা হয়, তোমাকে পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে, তোমাকে উপার্জনক্ষম হতে হবে, ছেলে বন্ধুদের সাথে অবাধ চলাফেরা করতে হবে, পোশাকের বৃত্ত থেকে বের হতে হবে, নারী স্বাধীনতার আন্দোলন করতে হবে, নারী মুক্তি আন্দোলন করতে হবে এ জাতীয় বাক-চক্রে সে আচ্ছন্ন।

এ জাতীয় কর্মকাণ্ডের সূতিকাগার আমেরিকার মত সভ্যদেশের নারীদের অবস্থা কতটা ভয়াবহ তা নিচের রিপোর্টে অনুমেয়:

ফিউচার উইদাউট ভায়োল্যান্স নামে মার্কিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরিচালক লিসা জেমস বলেছেন, অল্পবয়সীরাই যৌন পীড়নের বেশি শিকার। পীড়নের শিকারদের মধ্যে ২৮ শতাংশ পুরুষ জানিয়েছে ১০ বছর বয়সের আগেই তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। নারীদের বেলায় তা ১২ শতাংশ পীড়নের শিকারদের মধ্যে অর্ধেক ১৮ বছর বয়সে এবং ৮০ শতাংশ ২৫ বছর বয়সের আগেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তাদের ৩৫ শতাংশ পূর্ণ বয়স্ক হওয়ার পর পুনরায় যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক লিনডা ডিগটিস বলেছেন, নারীদের মধ্যে যৌন পীড়নের শিকার সংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্য রীতিমতো ভয়াবহ।

বাংলাদেশ অনুরূপ ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যার সামান্য চিত্র গত ১১ মে ২০১৪ তারিখের দৈনিক ভোরের কাগজে পরিদৃষ্ট হয়-

– মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশের ৩০-৫০% নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার।

– বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর “Violence against women (VAW) survey 2011” এর জরিপ অনুযায়ী দেশের অবিবাহিত নারীদের ৮৭% কোন না কোনভাবে নির্যাতনের শিকার, ৬৫% স্বামীর মাধ্যমে, ৩৬% যৌন নির্যাতন, ২৬% মানসিক নির্যাতনের শিকার।

– কর্মক্ষেত্রে ১৬% শারীরিক, ২৬% মানসিক আর ২৯% যৌন নির্যাতনের শিকার হন।

– আইন ও সালিশ কেন্দ্রের গত ৭ বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৬৭ জন নারী। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ৩৮৫, ২০১২ সালে ৪৮২, ২০১০ সালে ৩৯৭, ২০০৯ সালে ২৮১, ২০০৮ এ ৩১২, ২০০৭ এবং ২০০৬ এ ২৮৩ এবং ৩০১ জন। এই হিসাবে আমরা কী দেখলাম! আমাদের নারী মুক্তি কিভাবে হবে? তাদের কোন মূল্যায়ন ও মর্যাদা আছে কি?

অপ্রিয় সত্য কথা হলো, যারা নারীদের নিয়ে এত কিছু করার ভাবনা দেখায়, তাদের হাতে নারীজাতি কতটা নিরাপদ? তাদের নোংরা- লোভাতুর দৃষ্টি থেকে কতটা মুক্ত নারীরা? তাদের মুক্তি কি ঐ সকল সভ্যতা ও ধর্মের আলোকে হবে, যারা নারীদেরকে অপমান করার আর কোন নিচু স্তর পায়নি? যারা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে? যার কাছে ধর্মের কোন মূল্য নেই, পরকালের জবাবদিহিতার কোন চিন্তা নেই?

পাশ্চাত্যে যারা এই সকল নোংরা স্বাদ গ্রহণ করেছে তারা আজ আরও বিকল্প স্বাদের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। আল্লাহর দেয়া প্রাকৃতিক নিয়ম উপেক্ষা করে দুনিয়ার তাবৎ প্রাণীকূল যা না করে, সৃষ্টির সেরা মানুষ তাতেই বল্গাহীনভাবে ছুটে চলেছে যার কারণে মরণব্যাধি এইডস, সিফিলিস- প্রমেহ, ক্যানসার এরকম অসংখ্য খারাপ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।

সুতরাং এই চরম ভঙ্গুর অবস্থা থেকে নিজে এবং নিজের জাতিকে বাঁচাবার জন্যে আল্লাহ তায়ালা এবং রাসূল (সা.) নির্দেশিত পথে চলা এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্র চালানোর চেষ্টা ব্যতিরেকে এ মহাব্যাধি কোনভাবেই নিরাময় হবেনা। এ প্রসঙ্গে ড. সাইরিল গার্বেটের উক্তিটি উল্লেখ করতে চাই। তিনি বলেন- “Only definite moral conviction based upon religious faith will give the necessary self-control”- “একমাত্র ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে গঠিত সুনির্দিষ্ট দৃঢ় প্রত্যয়ই মানুষকে অনাচার হতে আত্মসংযমের শক্তি প্রদান করে।”

অতএব, পবিত্র কুরআন, সুন্নাহ এবং ধর্মীয় অনুশাসনের মাঝেই যে নারী জাতির তথা সকল সমস্যার কাঙিক্ষত মুক্তি নিহিত সে বিষয়টি যত দ্রুত আমরা বুঝতে পারব এবং বাস্তবায়ন করব তত দ্রুত নারী জাতির প্রকৃত মূল্যায়ন আমরা করতে পারব।

×

Comments are closed.